সুবিশাল এক কালো পরদা। তার গায়ে লক্ষ লক্ষ জোনাকি মিটিমিটি করে জ্বলছে। তাদের কেউ কেউ একটু বেশি উজ্জ্বল, কেউবা নিস্প্রভ। কেউ সাদা আলো দিচ্ছে, কেউবা নীল আলো। হয়ত কোনটা আবার জ্বলা-নেভা করছে। এমনি এক তারা ভরা রাতে কখন, কোথায়, কার মনেই বা সর্বপ্রথম ওই সুদূর নক্ষত্রের রহস্যময় বর্ণীল জগতকে দেখে বিশ্বজগতকে জানার তীব্র কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছিলো তা আজ আর জানা বেশ দুস্কর। হয়তো কোন তারা ভরা রাতে মহাসাগরে ভেলা ভাসিয়ে অজানার পথে ছুটতে ছুটতে হঠাৎ কোন জোনাকির খসে পরা দেখে তার মনে প্রথম অজানাকে জানার কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছিল। আন্তঃনাক্ষত্রিক কল্পনায় ভাসতে ভাসতে একসময় মানুষ অজানাকে জানার, অচেনাকে চেনার কৌতূহলে একসময় সভ্যতার সূচনা হল। মানুষ তার অনেক কৌতূহল পূরণ করেছে। কিন্তু সেই আদি ও অকৃত্রিম সৌন্দর্য মণ্ডিত কালো পর্দার গায়ে লাখো জোনাকির আবর্তন আজো তার মাথায় ঘুরপাক খায়। এরি মাঝে মহাকাশ ও নক্ষত্রদের নিয়ে তৈরি হয়েছে হাজার হাজার উপকথা।
হলিউড সিনেমা 'স্টারস ওয়ারস'-এর গ্রহ 'টাটুইন'র সঙ্গে মিল রয়েছে কেপলার ১৬বি'র। জর্জ লুকাসের সিনেমায় 'টাটুইন' গ্রহের 'লুক' ও 'অ্যানাকিন স্কাইওয়াকার' নামে দুটি সূর্য (নক্ষত্র) ছিল। এ জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এ গ্রহকে 'টাটুইন' নাম দিয়েছে।
হলিউড সিনেমা 'স্টারস ওয়ারস'-এর গ্রহ 'টাটুইন'র সঙ্গে মিল রয়েছে কেপলার ১৬বি'র। জর্জ লুকাসের সিনেমায় 'টাটুইন' গ্রহের 'লুক' ও 'অ্যানাকিন স্কাইওয়াকার' নামে দুটি সূর্য (নক্ষত্র) ছিল। এ জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এ গ্রহকে 'টাটুইন' নাম দিয়েছে।
ছায়াপথ মিল্কিওয়েতে পৃথিবী সদৃশ গ্রহের সন্ধানে ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করে কেপলার টেলিস্কোপ। গত বৃহস্পতিবার (১৫.০৯.২০১১) নাসা জানায়, তাদের কেপলার টেলিস্কোপের ধরা পড়েছে পৃথিবী থেকে ২০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত সাইগনাস নক্ষত্রপুঞ্জের এ গ্রহটি। নাসা এ গ্রহের নাম দিয়েছে কেপলার ১৬বি। গ্রহ একটি। কিন্তু দিনে দুইবার সূর্যোদয়, দুইবার সূর্যাস্ত! কখনো প্রথমে কমলা রঙের আবার কখনো লাল রঙের সূর্যোদয় হয়। সূর্যাস্তের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। অতীতে ধারণা ছিল, দুই সূর্য প্রদক্ষিণ করে এমন গ্রহের অস্তিত্ব রয়েছে। দুই সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে এমন গ্রহের সন্ধান এটিই প্রথম। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর সঙ্গে মিলে গেছে বাস্তবতা।
আমাদের সৌরজগতের শনি গ্রহের সমান আকারের কেপলার-১৬বি শিলা ও গ্যাসে পূর্ণ একটি গ্রহ। শনির মতো বসবাসের জন্য উপযোগী নয় গ্রহ কেপলার-১৬বি। কেপলার-১৬বি'র দুটি সূর্যই আমাদের সূর্যের চেয়ে ছোট। বড় সূর্যটির রং হলুদ এবং এটি আমাদের সূর্যের আকারের ৬৯ শতাংশ। লাল রঙের অন্য ছোট সূর্যটি আমাদের সূর্যের আকারের ২০ শতাংশ। গ্রহটির তাপমাত্রা মাইনাস ১০০ থেকে ১৫০ ফারেনহাইট। কেপলার-১৬বি ৬ কোটি ৫০ লাখ মাইল দূরত্বের দুই সূর্যকে একবার প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় ২২৯ দিন।
No comments:
Post a Comment